kazi ashraful islam
Friday, January 20, 2012
খালেদা জিয়ার কথা ঠিক থাকে না : প্রধানমন্ত্রী
যাযাদি রিপোর্ট বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন _ফোকাস বাংলাপ্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার কথা ঠিক থাকে না। তিনি এখন যা বলেন, পরে তা আবার ঘুরিয়ে ফেলেন। এ ধরনের মানুষের দ্বারা দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এক সময় তিনি বলেছেন, পাগল ও শিশু ছাড়া নিরপেক্ষ লোক পাওয়া যায় না। ওয়ান ইলেভেনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে জেল থেকে বেরিয়ে বলেছিলেন, এমন দিন আসবে যখন দেশের মানুষ আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইবে না। অথচ এখন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন। তবে হুমকি-ধামকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছে। এ কারণে বর্তমান সরকারের আমলে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন, উপ-নির্বাচনসহ যতগুলো নির্বাচন করেছে সবই অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করেছে। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের নির্বাচনী নীতি ছিল 'দশটা হো-া, বিশটা গু-া আর নির্বাচন ঠা-া'। বাংলাদেশে এখন তা আর চলবে না। ভোটের মালিক জনগণ। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে বললেন, তারা এটা মানবেন না। কিন্তু নির্বাচনে যখন নিজ দল সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হলেন, তখন আর কোনো কথা নেই। বিজয়ী প্রার্থীর গলায় মালা দিয়ে কাছে টেনে নিলেন। আসলে খালেদা জিয়ার কথা ঠিক থাকে না, একেক সময় একেক কথা বলেন। যার কথার ঠিক থাকে না, তিনি ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের জন্য কি করবেন? লুটপাট-দুর্নীতি আর অত্যাচার-নির্যাতন ছাড়া জনগণকে কিছুই দিতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ এখন শান্তিতে রয়েছে বলে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া অশান্তির আগুনে জ্বলছেন। কারণ তিনি দেশের মানুষের ভালো চান না, চান শুধু দেশের অর্থ-সম্পদ লুটেপুটে খেতে। দেশের মানুষকে তিনি অশান্তিতে রাখতে চান। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের মানুষ কিছু পায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বমন্দার পরেও তার সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনী ব্যাপকহারে বৃদ্ধি করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের মানুষকে লুটেপুটে খেতে, দুর্নীতি করে বিদেশে অর্থ পাচার করতে ক্ষমতায় আসে। দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, বোমাবাজি, জঙ্গিবাদ, ম ৭ শোষণ আর দেশের মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন এটাই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নীতি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় থেকে তারা দেশের মানুষের জন্য কিছু করেনি। সরকারি কাজ হলো জনগণের সেবা করা-এটা বর্তমান সরকার নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে আরো ২০/২৫ বছর আগেই দেশ সমৃদ্ধ হতো, থাকত না কোনো দারিদ্র্য। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মডেল হতো বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর পবিত্র সংবিধানকে সঙ্গীনের খোঁচায় ক্ষত-বিক্ষত করে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। জিয়াউর রহমান এ সব কাজ করেছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও ক্ষমতায় গিয়ে কারাবন্দি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি দেন। স্বাধীনতার চেতনা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য নষ্ট করে একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের মন্ত্রিসভার সদস্য বানান। শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানের সময় ১৮/১৯টি ক্যু হয়েছিল। আর এসব ক্যুতে যাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ক্ষমতায় যাওয়া হয়েছিল সেই সামরিক বাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হত্যা করা হয়। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে দেশকে আবার পিছিয়ে দেয়। এবারো ক্ষমতায় এসে তার সরকার বাংলাদেশকে মর্যাদার স্থানে নিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশকে স্বাবলম্বী করতে হবে। পরনির্ভরশীল থাকলে চলবে না। সরকারি ঋণ সহায়তা গ্রহণ করে নিজ উদ্যোগে স্বাবলম্বী হতে হবে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি আওয়ামী লীগ করেছে। এ চুক্তির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যাবতীয় পদক্ষেপ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করে হলেও পার্বত্যবাসীর চিকিৎসা সেবা দোরগোড়ায় পেঁৗছে দেয়া হবে। এ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। কারোর নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী বলে পরিচিত এক ব্যক্তি কাজের সময় কু-পরামর্শ দেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকতে পারবে। জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোই তার কাজ বলে মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ তৃণমূল সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। সভায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যতীন্দ্রলাল ত্রিপুরা ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল আলম ওই এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে তিনি দেশের সব জেলার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী ও বেগবান করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংগঠনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment