kazi ashraful islam

kazi ashraful islam

Sunday, January 22, 2012

সরকার উৎখাতের চেষ্টা ১১ সেনা কর্মকর্তাকে চিহ্নিত, জিজ্ঞাসাবাদ

সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ও সরকার উৎখাতের ব্যর্থ চেষ্টার ঘটনায় গতকাল রোববার পর্যন্ত ১১ জন পদস্থ সেনা কর্মকর্তাকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন মেজর জেনারেল, একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, দুজন লে. কর্নেল, ছয়জন মেজর ও ক্যাপ্টেন পদের একজন কর্মকর্তা।
দায়িত্বশীল সেনাসূত্র জানায়, ছয় সদস্যের তদন্ত আদালত এসব কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদের একজন কর্মকর্তাকে প্রধান করে গত ২৮ ডিসেম্বর সেনাসদর এ তদন্ত আদালত গঠন করে।
সেনাসূত্র জানায়, সংযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন কুমিল্লার ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের এরিয়া কমান্ডার (জিওসি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সাভারে নবম পদাতিক ডিভিশনের ৭১ ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তারিকুল আলম, ঢাকা সেনানিবাসের লে. কর্নেল সারোয়ার ও লে. কর্নেল জগলুল হক। এঁদের এবং তানজীব নামের একজন ক্যাপ্টেনকে ঢাকা সেনানিবাসের লগ এরিয়ায় সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ব্রিগেডে মেজর পদের দুজন ও সিগন্যালস ব্রিগেডে একজন মেজর সংযুক্ত আছেন। ঢাকার বাইরে রংপুর, কুমিল্লা ও সাভারে একজন করে মেজর পদের কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করা হয়।
ফোনালাপের সূত্র ধরে এসব কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ওই সূত্র আভাস দিয়েছে।
১৯ জানুয়ারি সেনা সদর দপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কিছু সদস্য দেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত এবং সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর এ পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়। বলা হয়, সেনাবাহিনীর মধ্যম সারির কয়েকজন কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সংখ্যা ১৪ থেকে ১৬ জনের বেশি নয়।
ঢাকায় সেনাসূত্র জানায়, এ ঘটনা তদন্তে শুরুতেই কর্মকর্তারা মেজর জিয়াউল হকের ব্যাপারে তথ্য পান। এরপর এহসান ইউসুফ ও ব্যবসায়ী ইশরাক আহমেদের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাঁদের ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ৮ জানুয়ারি সাভারের ব্রিগেড কমান্ডার তারিকুল আলমকে লগ এরিয়ায় সংযুক্ত করা হয়। এর চার দিন পর ১২ জানুয়ারি সংযুক্ত করা হয় কুমিল্লার জিওসি কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন তানজীবকে। অন্য দুই লে. কর্নেলকে ১৫ জানুয়ারি সংযুক্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সেনাসূত্র জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে চিহ্নিত ইশরাক আহমেদ কুমিল্লার জিওসির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তবে জিওসি এ তথ্য কোনো কর্তৃপক্ষকে জানাননি। তদন্ত আদালত এখনো কামরুজ্জামানের জবানবন্দি নেননি বলে জানা গেছে।
ওই সূত্রমতে, ইশরাক ৭১ ব্রিগেডের কমান্ডার তারিকুল আলমের সঙ্গেও দেখা করেন। ইশরাক নিজে ব্রিগেড কমান্ডারের কার্যালয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদে তারিকুল আলম এ তথ্য স্বীকার করেন। তারিকুল বলেন, ইশরাকের সুইডেনপ্রবাসী ভাই ইতরাক তাঁর পরিচিত। সেই সূত্র ধরে ইশরাক তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। ইশরাক একটি উপহার নিয়ে তাঁর কাছে আসেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপহার পাওয়ার পর ইশরাকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারিকুল। তিনি ফোনে এসএমএস ও ই-মেইল করেন। এসব এসএমএস ও ই-মেইল তদন্তকারীদের হাতে রয়েছে।
অভ্যুত্থান ছক: গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ও সরকার উৎখাতের ব্যর্থ চেষ্টার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রথমে সেনাপ্রধানসহ চারজন পদস্থ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁরা একটি কল্পিত সরকারব্যবস্থার ছক তৈরি করেন। ছক অনুযায়ী, জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের মন্ত্রী পদে বসানো হতো। গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা এহসান ইউসুফের ল্যাপটপে এসব পরিকল্পনার কথা উল্লেখ রয়েছে।
উগ্রপন্থীর সঙ্গে যোগাযোগ: সূত্রটি জানায়, পলাতক মেজর জিয়াউলের সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত উগ্রপন্থী সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এ মাসের শুরুতে সেনানিবাস এলাকায় হিযবুত তাহ্রীর একটি প্রচারপত্র বিতরণ করে। এতে শেখ হাসিনার সরকারকে অপসারণের আহ্বান জানানো হয়। ১৫ জানুয়ারি হিযবুত একই বিষয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার সাঁটায়। জিয়াউল ছাড়াও এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া লে. কর্নেল হাসিনুর রহমানসহ আরও তিনজন সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে হিযবুত তাহ্রীরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
র‌্যাব জানায়, বিদেশে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গত ২৮ জুলাই হিযবুতের নেতা ও ব্যবসায়ী মাহমুদুল বারীকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে। তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি বলেন, চাকরিরত দুজন লে. কর্নেল হাসিনুর রহমান ও লে. কর্নেল যায়ীদ এবং অবসরপ্রাপ্ত একজন লে. কর্নেল ও একজন মেজরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। হাসিনুরের সঙ্গে তিনি গুলশানের একটি হোটেলে বৈঠক করেন। এ ছাড়া জঙ্গিনেতা মওলানা ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাসিনুরের নাম বলেছিলেন বলে র‌্যাব গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান প্রথম আলোকে জানান।
তবে হাসিনুরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী শামীমা আখতার। গত শনিবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হরকাতুল জিহাদের নেতা মওলানা ইয়াহিয়াকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করেন হাসিনুর। তিনি অনেক জঙ্গিনেতাকে ধরতে সক্ষম হন। তিনি জঙ্গি দমন করেছেন। লে. কর্নেল যায়ীদের ছোট ভাই আ. আ. জাবীদ বলেন, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে কখনো কোনো উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল না। আইএসপিআরের এ-সংক্রান্ত সংবাদ সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।

পাঠকের মন্তব্য



সাইনইন

মন্তব্য প্রদানের জন্য সাইনইন করুন

mohammad rahman

mohammad rahman

২০১২.০১.২৩ ০৩:০২
বাংলাদেশের জন্যে বিভক্তি নয় । দরকার রাজ ৈনতক সমঝোতা । সামাজিক ন্যায় বিচার। আইনের শাসন। গ নমুখী ইস্যু ৈতরি করে সমমিলিত চেষটায় সুখি সমাজ গঠন। রাজ ৈতিক স্বার্থ সিদধীতে যত বেশি তৎপরতা চলবে সমাজও তত বিভক্ত হবে । অপশাক্তি সমাজের বিভক্তি আর অশান্তিকে পুজি করে স্বার্থ সিদধির চেষটা চালায় ! অপশক্তি দমনে সর্বো ৎকৃষট পনথা হল অপশক্তি কে সুযোগ না দেয়া

Hafizur Rahman

Hafizur Rahman

২০১২.০১.২৩ ০৩:০৫
It is very sensetive issue. I think this types of consperacy may be started a long time ago. The Army intelligence might have found their plan in initial stage. Our army, RAP and police intelligence group should be more active and efficient. In BDR issue they failed to find for that we had to sacrify 47 livies of army officers. Army officers were our assets but we lost we connot cover it at all.

রহমান

রহমান

২০১২.০১.২৩ ০৩:২২
শেখ হাসিনার সরকারকে যারা উত্খাত করতে চেয়েছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

MUHAMMAD

MUHAMMAD

২০১২.০১.২৩ ০৩:৫২
সেনাবাহিনীকে দলীয় করনের জন্যই এ কাহিনী বানানো হয়েছে।

daud rahman

daud rahman

২০১২.০১.২৩ ০৫:২৬
থলের বিড়াল বের হচ্ছে! সুষ্টু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত চাই .... and keep us posted!

mohammad rahman

mohammad rahman

২০১২.০১.২৩ ০৬:১৬
বাংলাদেশের জন্যে দরকার গনমুখী ইস্যু ৈতরি করে সমমিলিত চেষটায় সুখি সমাজ গঠন। রাজ ৈতিক স্বার্থ সিদধীতে যত বেশি তৎপরতা চালান হবে সমাজ ততই বিভক্ত হবে । অপশাক্তি সমাজের বিভক্তি অশান্তিকে পুজি করে স্বার্থ সিদধির চেষটা চালায় !

Sheikh Rafiq

Sheikh Rafiq

২০১২.০১.২৩ ০৯:০১
Big man behind, please find out ???

nurul absar hussain

nurul absar hussain

২০১২.০১.২৩ ০৯:৩৪
সেনা বাহিনীকে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নাই. আমরা পুরা ব্যাপারটা জানিতে চাই. এইটা জাতির জন্য আর গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ বিপদ. অপরাধী যেই হৌকানা কেন আইন যেন সবার জন্য প্রয়ুগ হই.

Md. Imran Ullah

Md. Imran Ullah

২০১২.০১.২৩ ০৯:৫৯
সেনাবাহিনী বাংলাদেশের গর্ব। কিছু কুচক্রী সবসময়ই চেয়েছে সেখানে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে। যেহেতু, ষঢ়যন্ত্র ফাস হয়ে গেছে এখন অপরাধীদের মিডিয়ার সামনে উপস্থিত করে জনগণকে আসল ঘটনা জানানো উচিত এতে জনগণকে যারা বিভ্রান্ত করতে চাইছে তাদের মুখোশ ও খুলে যাবে।

MD. ZULHASH UDDIN

MD. ZULHASH UDDIN

২০১২.০১.২৩ ১০:০৫
I THINK ITS A DRAMA BY GOVERMENT..........

Mohammad

Mohammad

২০১২.০১.২৩ ১০:৩১
সরকার এতদিন পর হৈচৈ শুরু করল কেন, ঘতনা যদি আরও আগে সঙ্ঘথিত হয়ে থাকে ??

M. Abdul. Hannan

M. Abdul. Hannan

২০১২.০১.২৩ ১০:৩৪
এতো দেখছি ১৫ই আগসটের থেকেও আরেকটা ভয়াবহ ডিসেমবর হতে যাইতাছিল। কারন ১৫ই আগসটে কোন মেজর জেনারেল বা ব্রিগেডিয়ার জড়িত থাকার নাম শুনিনি।

noyonika

noyonika

২০১২.০১.২৩ ১০:৪৫
একটি তথ্যবহুল নিউজ প্রকাশের জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। সেনাবাহিনীর মধ্যেকার আরো গোপন তথ্য বের করে দোষীদের শাস্তি কামনা করছি।

Md. Shahidullah

Md. Shahidullah

২০১২.০১.২৩ ১০:৫২
বাঘ আসিল বাঘ আসিল বলিয়া তামাসা করিতে করিতে সত্যিই একদিন বাঘ আসিয়া পড়িতে পারে... সাবধান !

robiul

robiul

২০১২.০১.২৩ ১০:৫৫
যাদেরকে দোষী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদেরকে মিডিয়ার সামনে উপস্থিত করে জাতিকে দেখানো হোক।

S.M. Arman

S.M. Arman

২০১২.০১.২৩ ১১:০০
সেনাবাহিনীতেও হিযবুত তাহরীর !!! খুবই শংকিত বোধ করছি।

No comments:

Post a Comment