kazi ashraful islam

kazi ashraful islam

Tuesday, February 14, 2012

সাইবার-যুদ্ধে ভারতের পরাজয়

বাংলাদেশভিত্তিক ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস গ্রুপ বিএসএফের একটিসহ ভারতের প্রায় ২০ হাজার ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে। হ্যাকিংয়ের কারণে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ওয়েবসাইটটি (www.bsf.nic.in) পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের বহুল প্রচারিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক ডেকান ক্রনিকল আজ এ খবর জানিয়েছে।
ক্রনিকলের খবরে বলা হয়, ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস গ্রুপ দাবি করেছে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার প্রতিবাদে তারা এ কাজ করেছে। ফেসবুকে এই গ্রুপের একটি ফ্যান পেজে এক হ্যাকার লিখেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নেই। কিন্তু বিএসএফের বর্বরতা এবং সর্বোপরি ভারত সরকার এটা করতে আমাদের বাধ্য করেছে।’



পত্রিকাটি বলেছে, ‘অপর একটি পোস্টে এক হ্যাকার লিখেছেন, ভারত ১৯৭১ সালে আমাদের সমর্থন করেছে। এখন তারা আমাদের হত্যা করছে। একজন ভণ্ড বন্ধুর চেয়ে একজন প্রকাশ্য শত্রু ভালো।’
অপর একটি পোস্টে এক পাঠক লিখেছেন, ‘আমি মৃত্যুর পরোয়া করি না। জয়ী না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধ অব্যাহত রাখব।’
ডেকান ক্রনিকল জানিয়েছে, বাংলাদেশের এই হ্যাকার গ্রুপটি ভারতের একটি জনপ্রিয় শেয়ার বাজারবিষয়ক সংবাদ ওয়েবসাইটও (www.paisacontrol.com) হ্যাক করেছে।
অনেক ওয়েবসাইট হ্যাক করার পর এই গ্রুপটি ওই সাইটে নানা ধরনের দাবি পোস্ট করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—‘বিএসএফ, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধ কর।’
এ ছাড়া ‘থ্রিএক্সপায়ারথ্রি সাইবার আর্মি নামের একটি বাংলাদেশি হ্যাকার গোষ্ঠী ভারতের সাত শতাধিক ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে বলে খবরে দাবি করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, ‘ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস লিখেছে, তারা এই হ্যাকিং উত্সব উদযাপন করছে। ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠীর সদস্য অ্যাসেল ইন্ডিয়া ভয়ে সাইবার বিশ্ব ছেড়ে গেছে। তাই আমরা বলতে পারি, এই সাইবার যুদ্ধে ভারতের পরাজয় হয়েছে।’
বাংলাদেশি হ্যাকার পরিচয় দানকারীরা বলছেন, বিএসএফ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ও অত্যাচার বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশি হ্যাকাররা এই সাইবার-যুদ্ধ শুরু করেছেন। টিপাইমুখ বাঁধসহ অন্যান্য বিষয়ের কথাও তাঁরা বলছেন।
৯ ফেব্রুয়ারি ভিডিও আদান-প্রদানের ওয়েবসাইট ইউটিউবে ভারত সরকারের প্রতি একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে ‘বিডি ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস’। ভিডিওতে মুখোশ পরা একজন হ্যাকারকে যান্ত্রিক (রোবটিক) গলায় কথা বলতে দেখা যায়। তাঁর বক্তব্য হলো, ‘হ্যালো বাংলাদেশের নাগরিকরা, আমরা বাংলাদেশ ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস। এখন সময় আমাদের চোখ খুলবার। বিএসএফ এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে, তাদের গুলিতে আহত হয়েছে আরও ৯৮৭ বাংলাদেশি। অপহূত হয়েছে হাজারো মানুষ। এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তারা অবিচার করছে। সংকটময় এ মুহূর্তে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ববোধ রয়েছে, আমরা চাই ভারত সরকার নিরপরাধ বাংলাদেশিদের হত্যা করা বন্ধ করুক। নতুবা আমরা ভারতীয়দের বিরুদ্ধে সাইবার-যুদ্ধ শুরু করব। এটি চলতেই থাকবে।’
বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশ সাইবার আর্মি’, ‘বিডি ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস’, ‘এক্সপায়ার সাইবার আর্মি’—এ তিনটি হ্যাকার গ্রুপ এই সাইবার-যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কয়েকজন হ্যাকার জানান, বাংলাদেশি হ্যাকারদের সমর্থন দিয়েছে আন্তর্জাতিক হ্যাকার দল ‘অ্যানোনিমাস’। এ ছাড়া পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরবের শক্তিশালী হ্যাকাররা বাংলাদেশি হ্যাকারদের সমর্থন দিয়ে গতকাল থেকে ভারতীয় সাইটে আক্রমণ করছেন। হ্যাকারদের ফেসবুক গ্রুপ, বিভিন্ন বাংলা ব্লগসাইটের একাধিক ব্লগে বাংলাদেশি হ্যাকারদের আক্রমণের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।
প্রথম আলোয় পাঠানো ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস দলের একটি ই-মেইলে বলা হয়েছে, এ আক্রমণ চলতেই থাকবে। ওই ই-মেইলে বাংলাদেশের কোনো সাইট আক্রান্ত হলে বা আক্রমণ ঠেকাতে ওয়েবমাস্টারদের কী করতে হবে, তার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভারতের ‘ইন্ডিশেল’ হ্যাকার দল বাংলাদেশি সাইটগুলোতে আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছে। অপরদিকে ভারতীয় হ্যাকারদের দাবি অনুযায়ী বাংলাদেশের ৩০০ সাইটে আক্রমণ করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment